ফিলিস্তিন-ইরানে মার্কিন-ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলা, আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি, জনগণের করণীয়

ফিলিস্তিন-ইরানে মার্কিন-ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলা, আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি, জনগণের করণীয়
আন্দোলন প্রতিবেদন
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | অনলাইন সংস্করণ
এক কোটিরও কম জনগণ অধ্যুষিত ছোট দেশ ইসরাইল। যে দেশের বহু জনগণই যুদ্ধ চান না। সেই দেশের সরকার সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহত যুদ্ধ বাধায় এবং গণহত্যা চালায় কীভাবে? সোজা উত্তর– মানব জাতির ঘৃণ্য দুশমন আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এই গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। মানুষের মৃতদেহের পাহাড়, হাড়ের স্তুপ, আর রক্তের বন্যার উপর চলছে আমেরিকার যুদ্ধ উম্মাদনা। সাম্রাজ্যবাদী মুনাফার লোভ এই যুদ্ধ সৃষ্টি করেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে মার্কিনেরই পোষা কুত্তা উগ্র ইহুদিবাদী ফ্যাসিস্ট ইসরাইল। এবারের পর্যায়ে মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ইসরায়েল সন্ত্রাসী হামলায় নারী-শিশুসহ ৫৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা করেছে এবং এক লক্ষের বেশি জনগণকে আহত করেছে। যার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগই হচ্ছেন নারী ও শিশু। পুরো গাজাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, লেবাননে হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ অনেক হত্যাযজ্ঞ চালানোর পাশাপাশি মার্কিন বিরোধী রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদের দালাল সিরিয়ার হাফিজ আল আসাদকে উচ্ছেদ করে আমেরিকা একটি ধর্মবাদী ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এটা পরিষ্কার যে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় ইসরাইলকে দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে মার্কিন-বিরোধী শক্তিগুলোকে উচ্ছেদ/দুর্বল করছে। সর্বশেষ ১৩ জুন’২৫ ইরানের উপর আক্রমণ। ইসরাইল যখন সংকটে তখন আমেরিকা সরাসরি ১০ হাজার মাইল দুর থেকে ১২০টি বিমান নিয়ে ইরানে বোমাবর্ষণ করে। ইরান আক্রমণের নেপথ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্য হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে তার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা। সেই লক্ষ্যে আমেরিকা সরকার-বিরোধী সকল শক্তিকে সমাবেশিত করে ইরানে সিরিয়ার মতো রেজিম চেঞ্জ করে মার্কিন দালাল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। অছিলা বা ছুতা হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর উপকরণ ধ্বংস করা। একই কথা তারা ইরাক আক্রমণের সময়ও বলেছিল। পরে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ইরাক আক্রমণের জন্য কেউ তাদের বিচার করা তো দূরের কথা কৈফিয়তও চাইতে পারেনি। এবার ইরানে মার্কিনি পুরো পরিকল্পনা সফল হয়নি বলা যায়। তবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ মধ্যপ্রাচ্যে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আগ্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধানোর প্রস্তুতি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৫০টিরও বেশি দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ করেছে। অনেক দেশেই তাদের সেনাঘাঁটি রয়েছে। এটাই আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির সারমর্ম। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসী আক্রমণের পর ইউক্রেনকে যুদ্ধের মদদদাতাও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। আমেরিকার অর্থনীতির চালিকাশক্তি হচ্ছে সমরাস্ত্র ব্যবসা। আশির দশকে মার্কিন-রুশ শীতল যুদ্ধের প্রক্রিয়ায় রাশিয়া আফগানিস্থানে যুদ্ধে জড়িয়ে সুপার পাওয়ার থেকে দুর্বল হয়ে পড়লে আমেরিকার নেতৃত্বে এক মেরু বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যেই চীনা সামজিক সাম্রাজ্যবাদের বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আগমন ঘটে। ফলে একমেরু বিশ্বব্যবস্থা ভেঙ্গে বহু মেরু ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়। চিহ্নিত ও ঘোষিত ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এখন জুলাইয়ের মাঝামাঝি এসে দেখা যাচ্ছে জ্বলন্ত দ্বন্দ্বময় পৃথিবীকে সে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। ফিলিস্তিনের গাজাকে বিনোদন কেন্দ্র বানানোর ঘোষণার পরেই ইসরাইলকে দিয়ে ইরান আক্রমণের পরপরই ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের/শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সেই আলটিমেটামের সময় পার হওয়ার আগেই ১২০টা যুদ্ধ বিমান নিয়ে ইরানে হামলা চালায়। আবার আক্রমণের পরপরই ট্রাম্প নিজেই যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা দিয়ে নিজেকে “শান্তির” দূত হিসেবে জাহির করে। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়ার আহ্বান জানিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছে। ট্রাম্প নিজেও দাবি করেছে সে পাঁচটি নোবেল পুরস্কার পেতে পারে! এসব থেকে যে কারো মনে হতে পারে, ট্রাম্প পাগলের মতো যখন যা খুশি তাই করছে। ব্যাপারটা মোটেই এমন সরল নয়। বরং আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে নিজেদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী চীন-রাশিয়াকে কোনো ধরনের সুযোগ দিতে চায় না আমেরিকা। তারা মধ্যপ্রাচ্যে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে। যুদ্ধ শুধু দুই দেশ বা দুই জোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বৈশ্বিক অর্থনীতি-নিরাপত্তা-বাণিজ্য সবকিছুর উপর তার প্রভাব পড়ছে। বিশ্বের জনগণের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীরা। এটা করছে বিশ্বে তাদের শোষণ-লুণ্ঠন-নিয়ন্ত্রণ চালাবার জন্য। কিন্তু এটা করতে গিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব অতি-তীব্র হয়ে উঠছে। নিজেদের আধিপত্য নিরঙ্কুশ করার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। যার একদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যদিকে চীন-রাশিয়া। সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা যতদিন থাকবে এমন যুদ্ধ পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। বা সাম্রাজ্যবাদীদের ঘোর সংকটে বিশ্বযুদ্ধও বেধে যেতে পারে, যার প্রস্তুতি তারা এভাবে আঞ্চলিক যুদ্ধগুলোর মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে। আমাদের দেশের দালাল শাসক আমলা-মুৎসুদ্দি শ্রেণি সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থারই অংশ। সেজন্য এরাও আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বের অংশ হয়ে আমাদের দেশকেও যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত। মিয়ানমারের দিকে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ দেয়া বা সেন্টমার্টিনকে মার্কিনের নিকট লিজ দেয়া অথবা মার্কিন নেতৃত্বে কোয়াড জোটে যুক্ত হওয়া বা চীনের নেতৃত্বে ত্রিদেশীয় জোট গঠন করা– অথবা সেগুলোর প্রস্তুতি এ চক্রান্তেরই অংশ। সকল দেশের জনগণের করণীয় হচ্ছে– বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক সংগঠনে সংগঠিত হওয়া এবং সকল বিপ্লবী-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল শক্তির সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ঐক্যফ্রণ্ট গড়ে তোলা; বিপ্লবী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের বিশ্বযুদ্ধের পাঁয়তারাকে রুখে দেয়া।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ফিলিস্তিন-ইরানে মার্কিন-ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলা, আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি, জনগণের করণীয়
এক কোটিরও কম জনগণ অধ্যুষিত ছোট দেশ ইসরাইল। যে দেশের বহু জনগণই যুদ্ধ চান না। সেই দেশের সরকার সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহত যুদ্ধ বাধায় এবং গণহত্যা চালায় কীভাবে? সোজা উত্তর– মানব জাতির ঘৃণ্য দুশমন আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এই গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। মানুষের মৃতদেহের পাহাড়, হাড়ের স্তুপ, আর রক্তের বন্যার উপর চলছে আমেরিকার যুদ্ধ উম্মাদনা। সাম্রাজ্যবাদী মুনাফার লোভ এই যুদ্ধ সৃষ্টি করেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে মার্কিনেরই পোষা কুত্তা উগ্র ইহুদিবাদী ফ্যাসিস্ট ইসরাইল। এবারের পর্যায়ে মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ইসরায়েল সন্ত্রাসী হামলায় নারী-শিশুসহ ৫৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা করেছে এবং এক লক্ষের বেশি জনগণকে আহত করেছে। যার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগই হচ্ছেন নারী ও শিশু। পুরো গাজাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, লেবাননে হিজবুল্লাহ কমান্ডারসহ অনেক হত্যাযজ্ঞ চালানোর পাশাপাশি মার্কিন বিরোধী রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদের দালাল সিরিয়ার হাফিজ আল আসাদকে উচ্ছেদ করে আমেরিকা একটি ধর্মবাদী ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এটা পরিষ্কার যে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় ইসরাইলকে দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে মার্কিন-বিরোধী শক্তিগুলোকে উচ্ছেদ/দুর্বল করছে। সর্বশেষ ১৩ জুন’২৫ ইরানের উপর আক্রমণ। ইসরাইল যখন সংকটে তখন আমেরিকা সরাসরি ১০ হাজার মাইল দুর থেকে ১২০টি বিমান নিয়ে ইরানে বোমাবর্ষণ করে। ইরান আক্রমণের নেপথ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্য হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে তার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা। সেই লক্ষ্যে আমেরিকা সরকার-বিরোধী সকল শক্তিকে সমাবেশিত করে ইরানে সিরিয়ার মতো রেজিম চেঞ্জ করে মার্কিন দালাল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। অছিলা বা ছুতা হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর উপকরণ ধ্বংস করা। একই কথা তারা ইরাক আক্রমণের সময়ও বলেছিল। পরে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ইরাক আক্রমণের জন্য কেউ তাদের বিচার করা তো দূরের কথা কৈফিয়তও চাইতে পারেনি। এবার ইরানে মার্কিনি পুরো পরিকল্পনা সফল হয়নি বলা যায়। তবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ মধ্যপ্রাচ্যে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আগ্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধানোর প্রস্তুতি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৫০টিরও বেশি দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ করেছে। অনেক দেশেই তাদের সেনাঘাঁটি রয়েছে। এটাই আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির সারমর্ম। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসী আক্রমণের পর ইউক্রেনকে যুদ্ধের মদদদাতাও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। আমেরিকার অর্থনীতির চালিকাশক্তি হচ্ছে সমরাস্ত্র ব্যবসা। আশির দশকে মার্কিন-রুশ শীতল যুদ্ধের প্রক্রিয়ায় রাশিয়া আফগানিস্থানে যুদ্ধে জড়িয়ে সুপার পাওয়ার থেকে দুর্বল হয়ে পড়লে আমেরিকার নেতৃত্বে এক মেরু বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যেই চীনা সামজিক সাম্রাজ্যবাদের বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আগমন ঘটে। ফলে একমেরু বিশ্বব্যবস্থা ভেঙ্গে বহু মেরু ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়। চিহ্নিত ও ঘোষিত ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এখন জুলাইয়ের মাঝামাঝি এসে দেখা যাচ্ছে জ্বলন্ত দ্বন্দ্বময় পৃথিবীকে সে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। ফিলিস্তিনের গাজাকে বিনোদন কেন্দ্র বানানোর ঘোষণার পরেই ইসরাইলকে দিয়ে ইরান আক্রমণের পরপরই ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের/শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সেই আলটিমেটামের সময় পার হওয়ার আগেই ১২০টা যুদ্ধ বিমান নিয়ে ইরানে হামলা চালায়। আবার আক্রমণের পরপরই ট্রাম্প নিজেই যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা দিয়ে নিজেকে “শান্তির” দূত হিসেবে জাহির করে। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়ার আহ্বান জানিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছে। ট্রাম্প নিজেও দাবি করেছে সে পাঁচটি নোবেল পুরস্কার পেতে পারে! এসব থেকে যে কারো মনে হতে পারে, ট্রাম্প পাগলের মতো যখন যা খুশি তাই করছে। ব্যাপারটা মোটেই এমন সরল নয়। বরং আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে নিজেদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী চীন-রাশিয়াকে কোনো ধরনের সুযোগ দিতে চায় না আমেরিকা। তারা মধ্যপ্রাচ্যে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে। যুদ্ধ শুধু দুই দেশ বা দুই জোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বৈশ্বিক অর্থনীতি-নিরাপত্তা-বাণিজ্য সবকিছুর উপর তার প্রভাব পড়ছে। বিশ্বের জনগণের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীরা। এটা করছে বিশ্বে তাদের শোষণ-লুণ্ঠন-নিয়ন্ত্রণ চালাবার জন্য। কিন্তু এটা করতে গিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব অতি-তীব্র হয়ে উঠছে। নিজেদের আধিপত্য নিরঙ্কুশ করার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। যার একদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যদিকে চীন-রাশিয়া। সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা যতদিন থাকবে এমন যুদ্ধ পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। বা সাম্রাজ্যবাদীদের ঘোর সংকটে বিশ্বযুদ্ধও বেধে যেতে পারে, যার প্রস্তুতি তারা এভাবে আঞ্চলিক যুদ্ধগুলোর মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে। আমাদের দেশের দালাল শাসক আমলা-মুৎসুদ্দি শ্রেণি সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থারই অংশ। সেজন্য এরাও আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বের অংশ হয়ে আমাদের দেশকেও যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত। মিয়ানমারের দিকে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ দেয়া বা সেন্টমার্টিনকে মার্কিনের নিকট লিজ দেয়া অথবা মার্কিন নেতৃত্বে কোয়াড জোটে যুক্ত হওয়া বা চীনের নেতৃত্বে ত্রিদেশীয় জোট গঠন করা– অথবা সেগুলোর প্রস্তুতি এ চক্রান্তেরই অংশ। সকল দেশের জনগণের করণীয় হচ্ছে– বিপ্লবী ও গণতান্ত্রিক সংগঠনে সংগঠিত হওয়া এবং সকল বিপ্লবী-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল শক্তির সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ঐক্যফ্রণ্ট গড়ে তোলা; বিপ্লবী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের বিশ্বযুদ্ধের পাঁয়তারাকে রুখে দেয়া।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র